‘করোনা’ ১০০ দিন ও বর্তমান বিশ্ব

মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ◑

করোনাভাইরাস” নামটির উৎপত্তি লাতিন শব্দ করোনা থেকে যার অর্থ “মুকুট” বা “হার”। নামটি ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে ভিরিয়নের (ভাইরাসের সংক্রামক আকার) বৈশিষ্ট্যমূলক উপস্থিতিকে নির্দেশ করে।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল পর্যন্ত Worldometers.info এর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ২০৯ টিরও বেশি দেশ ও অধীনস্থ অঞ্চলে ১৪৯৫৭১২ (চৌদ্দ লক্ষ পছানব্ব‌ই হাজার সাতশত বারো )-এরও বেশি ব্যক্তি করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। এদের মধ্যে ৮৭,৬০৩ জনের ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে এবং ৩,১৯,১৬০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে।

আজ বিশ্বেব্যাপী (২০-২২) ন্যনোমিটার আকৃতির একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সৃষ্টির কাছে দুনিয়ার দাপুটে রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যেও ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে। “করোনার” ভয়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর শহর থেকে শুরু রাস্তাঘাটও আজ ভুতুড়ে। এই ক্ষুদ্র সৃষ্টির কাছে মহা প্রতাপশালী দেশগুলো আজ অসহায় হয়ে তাকিয়ে আছে আসমানী সিদ্ধান্তের দিকে। উন্নত প্রযুক্তি সমূহ আত্মসমর্পন করেছে, অন্তত এখনো পর্যন্ত সে কথা বলাই যায়। অচিরেই হয়তো এর প্রতিষেধক আবিস্কার হবে (আমরা দোয়াও করি তাই), কিন্তু আজকের বিজ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তি তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে এই ক্ষুদ্র সৃষ্টির কাছে অসহায় হয়ে থাকবে তা কেউ কল্পনাও করেছে?

অকপটে বলাই চলে – এ তো মহান সেই রাজার রাজত্বের রাজলিলা মাত্র।

নমরূদ যখন অহংকার করেছিলো মহান আল্লাহ তার অহংকার চূর্ণ করতে ক্ষুদ্র মশা পাঠিয়েছিলেন। আজকের বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের বিশ্বের অহংকার আর দম্ভ নমরূদের চেয়েও কোন অংশে কম নয়।সে জন্যই কি আল্লাহ তায়ালা মশার চেয়েও ক্ষুদ্র সৃষ্টি তথা করোনা দিয়ে আমাদের অক্ষমতা প্রমাণ করছেন?

এ প্রশ্নের উত্তর তিনিই ভালো জানেন। তবে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারবেন না কোনো বিশ্বাসী মানুষ। আমাদেরকে মহান রবের দিকে ফিরে যেতে হবে, বেশি বেশি ইবাদত বান্দেগীর পাশাপাশি তাওবা ইস্তেগফার করে প্রভুর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে। রাব্বে কারীমের করুনায়‌’ই আমাদের একমাত্র মুক্তির পথ।

এই মহা দুর্যোগকালে প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, মিডিয়াকর্মী, এবং খাদ্য বা ত্রান বিতরণকারী ভলান্টিয়ারস্ ভাই-বোনেরা যারাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন আপনাদের সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আপনারাই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কোটি মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আছে আপনাদের সাথে।

পরিশেষে- বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিজ নিজ দায়িত্বে সাবধান থাকতে হবে সবাইকে। আল্লাহ তায়ালা প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ সহ বিশ্বেবাসীকে এই মহামারী থেকে হেফাজত করুন, আমীন।